January 13, 2025, 4:26 am

সংবাদ শিরোনাম

টাঙ্গাইলের বহুল আলোচিত বাস ডাকাতি ও ধর্ষণের নাটেরগুরু মধুপুরের রতন

বাবুল রানা মধুপুর প্রতিনিধি:

টাঙ্গাইলের বহুল আলোচিত  কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঈগল এক্সপ্রেস পরিবহনের বাসে ডাকাতি ও যাত্রী ধর্ষণের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী রতনের বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কুড়ালিয়া ইউনিয়নের ধলপুর গ্রামে। ঘটনার পর সেই ডাকাতদলের মূল পরিকল্পনাকারী রতন তার কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে ঘটনাস্থল রক্তিপাড়া থেকে পালিয়ে প্রথমে আশ্রয় নেয় টাঙ্গাইলের মধুপুরের কুড়ালিয়া গ্রামে তার নানা বেলো মিয়ার বাড়িতে।

বুধবার (৩আগষ্ট) ভোর ৪টার দিকে তার নানার বাড়ির তালাবদ্ধ ঘরের চাবি জোর করে নিয়ে ভিতরে ঢুকেনএবং সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়েন। পরবর্তীতে ঘর পরিস্কার করতে গিয়ে উক্ত বাড়ির গৃহবধূ জেরিন ৩টি মোবাইলের ব্যাক কভার এবং একটি ছুরি দেখতে পায় বলে আমাদেরকে জানিয়েছেন।
ডাকাত দলের মুলহোতা রতনসহ ১০সদস্য র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর সোমবার (৮আগষ্ট) সরেজমিনে গিয়ে মুল পরিকল্পনাকারী রতনের মধুপুর উপজেলার ধলপুর গ্রামের বাড়িতে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।তাদের ঘরবাড়ি তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। এলাকাবাসী জানান, প্রায় ১০/১২ বছর আগে রতনের মা বেলী বেগম ধলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনেই ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করে তার প্রথম পক্ষের ২ সন্তান আয়নাল ও রতনকে নিয়ে বাড়ি করে বসবাস শুরু করেন। বাড়ি করার বেশ কিছুদিন পর বেলী বেগম ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার বাসিন্দা শাকিলকে বিয়ে করেন। এলাকাবাসী জানান, আয়নাল, রতন ও বেলীর ২য় স্বামী শাকিল অনেকদিন যাবৎ ঢাকায় বসবাস করেন। বাড়িতে বেলী বেগম তার ২য় পক্ষের ৫ বছরের একমাত্র  মেয়েকে নিয়ে থাকেন। প্রতিবেশী বৃদ্ধ মীর আলী জানান, তারা মাঝে মধ্যেই এই বাড়িতে আসা-যাওয়া করেন। লোক মুখে জানতে পারি তারা ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত। ছিনতাই করা মোবাইল এবং নানান জিনিসপত্র এনে তার মা বেলী বেগমের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করতো বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। এসব বিষয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে গেলে বেলী বেগম তাদেরকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও  মামলায় ফেলার হুমকি দিতো যে কারণে আশ- পাশের কেউ মুখ খুলতে সাহস পেতো না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বাসিন্দা বলেন, ‘বেলীর আগের ঘরের ছেলে রতন ও আয়নালের নামে চুরি,ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের  একাধিক মামলা রয়েছে। এর আগেও তারা বিভিন্ন মামলায় কারাভোগ করেছেন। 

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার পরিদর্শক তদন্ত মো. মুরাদ হোসেন বলেন, ‘রতনের বাড়ি মধুপুরে আমিও শুনেছি। অফিসিয়ালি কোনো বার্তা পাইনি। বিষয়টির তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ। তাঁরা যদি প্রয়োজন মনে করেন মধুপুরের বিষয়গুলোও ক্ষতিয়ে দেখবেন।’ কুড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমি লোক মারফত জানতে পেরেছি, চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষনের ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি রতনের বাড়ি মধুপুরের ধলপুর। তিনি জানান, বাসে ডাকাতি ও যাত্রী ধর্ষণের ঘটনা খুবই নেক্কারজনক, আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।  এলাকাবাসী রতনের এই লোমহর্ষক ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান যাতে আর কোন মেয়েকে তার মা বাবার সামনে, কোন স্ত্রীকে তার স্বামীর সামনে এবং কোন ভাইয়ের সামনে তার বোনকে ধর্ষিত হতে না হয়। মধুপুরে চলন্ত বাসে কয়েকটি  গনধর্ষন এবং ধর্ষনের পর হত্যার ঘটনা উল্লেখ করে বিশিষ্টজনেরা বলেন, এই সকল অপরাধীরা মধুপুরকে একটি নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বেছে নিয়েছে,তারা যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে মধুপুর আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে চেকপোস্টের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত দূরপাল্লার বাস তল্লাশীর দাবি জানান।
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর